শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৩২ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের দিনার গ্রামে হেলেনা আক্তার মুন্নি (১২) নামে এক স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক ঝুলন্ত মরদেহ নিয়ে ধম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয় পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে রোববার বিকেলে মরদেহ দাফন করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, মুন্নিকে পাশবিক নির্যাতন করে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
নিহত মুন্নি ওই এলাকার হেলাল হাওলাদারের মেয়ে। সে স্থানীয় দিনার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। জানা গেছে, হেলাল হাওলাদার দিনার গ্রামে ফরুক খানের বাসায় ভাড়া থাকতেন।
রোববার সন্ধ্যায় সরেজমিনে ওই স্কুলছাত্রীর বাড়িতে গেলে তার মা রেনু বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি জানান, তার স্বামী ভ্যান চালাক। তিনি নিজে নগরীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে। এ কারণে ঘটনার দিন ঘরে কেউ ছিল না। রাতে কাজ শেষে তিনি ঘরে ফেরার পর তার মেয়েকে আড়ার সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। মুন্নির মরদেহ ঝুলন্ত থাকলেও তার হাঁটু ভাঁজ হয়ে মেঝের সঙ্গে লেগে ছিল।
রেনু বেগম অভিযোগ করে বলেন, মুন্নিকে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। মেয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করছি। তবে কে বা কারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সে ব্যাপারে তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
মুন্নির নানী আমেনা বেগম জানান, নিহত মুন্নির দুই পা ও পরনের পোশাকে কাদা লেগে ছিল। মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামানোর পর আমি তার গোপনাঙ্গে সামন্য রক্তের দাগ দেখতে পেয়েছি। হয়তো কেউ ধর্ষণ করে বা ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে মুন্নিকে হত্যা করে ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে আত্মহত্যার এ নাটক সাজিয়েছে।
তিনি আরো জানান, মুন্নির মরদেহ যে স্থানে ঝুলছিল তার পাশে টেবিলের ওপর একটি বাটিতে ভাত ও একটি চা ভর্তি কাপ ছিল। সে যদি আত্মহত্যা করতো তাহলে মৃত্যুর আগমুহূর্তে তার হাত-পা ছোড়াছুড়ি করার কথা। আর এতে পায়ের ধাক্কায় ভাত ও চায়ের কাপ মাটিতে পড়ে যাওয়ার কথা। ঘটনার দিন রাতে যখন আমরা মুন্নির মরদেহ দেখতে পাই, তখন ঘরের সামনের দরজা খোলা ছিল। যাতে স্পষ্ট বোঝা যায়, ঘরে মুন্নি ছাড়াও অন্য কেউ প্রবেশ করেছিল।
বরিশাল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর মুন্নীর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply